❁ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ হোক, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে, জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে,
*ইলম অন্বেষণকারী সকলের উচিত নিয়ত কে পরিশুদ্ধ করে নেওয়া এবং পার্থিব অর্থাৎ ইহকালীন জীবনে ধন সম্পদ, পুরষ্কার বা অন্যকিছু লাভের উদ্দেশ্যে দ্বীনি ইলম অর্জন না করা। যারা দ্বীনি শিক্ষা দুনিয়াবী কিছু লাভের উদ্দেশ্যে করবে, তারা জান্নাতের সুগন্ধটুকুও পাবে না।
❒ মহানবী ﷺ বলেছেন,
(( مَنْ تَعَلَّمَ عِلْماً مِمَّا يُبْتَغَى بِهِ وَجْهُ اللهِ - عَزَّ وَجَلَّ - لاَ يَتَعَلَّمُهُ إِلاَّ لِيُصِيبَ بِهِ عَرَضاً مِنَ الدُّنْيَا ، لَمْ يَجِدْ عَرْفَ الجَنَّةِ يَوْمَ القِيَامَةِ ))।
“যে বিদ্যা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, তা যদি একমাত্র সামান্য পার্থিব স্বার্থ লাভের উদ্দেশ্যে কেউ শিক্ষা করে, তাহলে সে কিয়ামতের দিনে জান্নাতের সুগন্ধটুকুও পাবে না।” (আবূ দাঊদ ৩৬৬৬নং)
তিনি আরো বলেছেন,
((بَشِّرْ هَذِهِ الْأُمَّةَ بِالسَّنَاءِ وَالتَّمْكِينِ فِي الْبِلَادِ وَالنَّصْرِ وَالرِّفْعَةِ فِي الدِّينِ وَمَنْ عَمِلَ مِنْهُمْ بِعَمَلِ الْآخِرَةِ لِلدُّنْيَا فَلَيْسَ لَهُ فِي الْآخِرَةِ نَصِيبٌ))।
“এই উম্মতকে স্বাচ্ছন্দ্য, সমুন্নতি, দ্বীন সহ সুউচ্চ মর্যাদা, দেশসমূহে তাদের ক্ষমতা বিস্তার এবং বিজয়ের সুসংবাদ দাও। কিন্তু যে ব্যক্তি পার্থিব কোন স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে পরকালের কর্ম করবে তার জন্য পরকালে প্রাপ্য কোন অংশ নেই।” (আহমাদ ২১২২৪, ইবনে মাজাহ, হাকেম, বাইহাকীর শুআবুল ঈমান ৬৮৩৩ ইবনে হিব্বান ৪০৫,, সহীহ তারগীব ২১নং)
যারা "পুরস্কার, সুনাম, সুখ্যাতি অর্জন কিংবা মানুষ তাকে বলবে অমুক তো অনেক বড় মুফতি, অনেক বড় আলেম" ইত্যাদি উদ্দেশ্যে দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করবে, তাদের স্থান হবে জাহান্নামে।
রাসূল ﷺ বলেছেন, "যে ব্যক্তি আলিমদের সাথে তর্ক বাহাস করা অথবা জাহিল-মূর্খদের সাথে বাকবিতণ্ডা করার জন্য এবং মানুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশে ইলম অধ্যয়ন করেছে, আল্লাহ তা'আলা তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (তিরমিজি :২৬৫৪, ইবনে মাজাহ :২৫৩)
রাসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য ব্যতীত, দুনিয়াতে সুখ্যাতির উদ্দেশ্যে, কুরআন অধ্যয়ন করবে, তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (মুসলিম হা: ১৫২/১৯০৫)
দ্বীনি ইলম শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে অণ্বেষণ করতে হবে। মান-মর্যাদা, সুনাম-সুখ্যাতি এবং পার্থিব জীবনের কোনো সামগ্রী পুরস্কার লাভের উদ্দেশ্যে দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা শির্কের শামিল ( ছোটো শিরক)। তাই আমাদের পুরষ্কার পাওয়াই যেন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে না হয়, পুরষ্কার পাওয়া যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে - এই প্রতিযোগিতা থেকে কোনো পরকালিন কল্যাণ পাবেন না বরং পরকালীন ঠিকানা হবে জাহান্নাম এবং প্রতিযোগিতা শেষ হলে কিছুদিন পর বই থেকে যা পড়েছিলেন সব ভুলে যাবেন এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে না পারলে আফসোস করে বলবেন, 'এতো পরলাম তবুও একটুর জন্য বিজয়ী হতে পারলাম না'।
আর যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন, তাহলে বিজয়ী না হতে পারলেও আফসোস হবে না। বরং অনেক জ্ঞান অর্জন হবে এবং আল্লাহ্ তায়ালা আপনার জান্নাতের পথ সহজ করে দিবেন।
❒ রাসূল ﷺ বলেছেন,
" مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ "
যে ব্যক্তি জ্ঞানের খোঁজে কোন পথে চলবে, তার জন্য আল্লাহ তা'আলা জান্নাতের পথ সহজ করে দিবেন।
[সহীহঃ তিরমীযী:২৬৪৬ ইবনু মা-জাহ ২২৫, মুসলিম।]
আল্লাহ্ তাআলা আমাদের নিয়ত কে পরিশুদ্ধ করুন। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমাদের ইলম অন্বেষণের তাওফিক দান করুন। আমীন।
ফেসবুক পেইজ লিঙ্ক: https://www.facebook.com/siratur.rasul.sallallahu.alaihi.wasallam/